পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় দক্ষিণ মেহেরনামা নন্দীরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ধসে পড়ছে বিদ্যালয়ের ছাদের প্লাস্টার। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির শংকা নিয়ে চলছে পাঠদান। দেখা দিয়েছে দুর্ঘটনার আশংকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবহেলিত গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়টি। সরকার এ বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে একটি ৪ কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নিমার্ণের জন্য। নির্মিত এ ভবনের ছাদে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। আবার অন্যান্য জায়গায় প্লাস্টার ঝড়ে পড়ছে নিচে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এ বিদ্যালয়ে আর কোন ভবন না থাকায় এসব কক্ষে দুর্ঘটনার শংকা নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। অনেক শিক্ষার্থীই এসব আতংকের কারণে নিয়মিত ক্লাসে আসে না এমনটাই অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ফলে যেকোন মুহূর্তে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকায় স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সর্বমহল।
এসময় কথা হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল আলমের সাথে। তিনি জানান, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নন্দীরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। যার ব্যয় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা। বিগত ২০০৫ সালের ২০ মে নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ এমপি।
তিনি আরো জানান, ভবন নির্মাণে অনিয়মের কারণে বৃষ্টি হলে বিদ্যালয় ভবনের ছাদ থেকে পানি পড়ে। বিদ্যালয়ের মেঝে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনের ছাদ ধসে পড়ছে।
বিদ্যালয়ের বেশ কজন অভিভাবক জানান, কাজের মূল ঠিকাদার ভবন নির্মাণের জন্য মালামাল এনেছিলেন। সিকদারপাড়ার অসাধু কিছু ব্যক্তি ওই ঠিকাদারের কাজ বাগিয়ে নিয়ে তারা নিজেরাই অনিয়মের মাধ্যমে কাজ করে। ফলে ভবনের এ বেহাল দশা দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: ইব্রাহীম জানান, বিদ্যালয়ের এ করুণ অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে। তারা বিদ্যালয় ভবন মেরামতের বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভবনটি মেরামত করলে পুরোপুরি নিরাপদ হবে না। পুরানো ভবনটি ভেঙ্গে ফেলে সেখানে পূণরায় নতুন ভবন নির্মাণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষের অভাবে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মাহামুদ জানান, বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সে বিষয়ে জানিনা। বিষয়টি শিক্ষা অফিসকে জানাতে হবে। নতুন ভবনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠাতে হবে। অনুমোদন হয়ে আসলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ বুশ বলেন, ওই স্কুল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।