ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিএসপি’র কুমিল্লা সমাবেশে শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী

আবদুর রহিম জয় চৌধুরী, ফেনী:

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীতে ভর্তুকি দিয়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের পাঁচ কোটি মানুষকে ক্রয়ের সুবিধা দিতে হবে।

একদিকে ডেঙ্গু অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর আকাশছোঁয়া দামে মানুষ দিশেহারা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাই চাল, ডাল, আটা, তেল, পেঁয়াজ ও লবণ খাতে ভর্তুুকি দিয়ে স্বল্পমূল্যে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষকে ক্রয়ের সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার বিকালে কুমিল্লা টাউন হল ময়দানে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, সংবিধান অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমুলক নির্বাচনের দাবিতে কুমিল্লা জেলা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) উদ্যোগে জনসভায় লিবারেল ইসলামিক জোট ও বিএসপি চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটের কারণে জনজীবন দুর্বিষহ। বাজারে জিনিসপত্রের আজ এক দাম তো কাল আরেক দাম। যে পণ্য দু’মাস আগে আমদানী হয়েছে, সেই পণ্য আজকে ডলারের দাম বাড়ার অজুহাত দিয়ে অসাধু চক্র বাজারে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থা থেকে জনগণ মুক্তি চায়। টাস্কফোর্স গঠন করে এই অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তিনি। ব্যবসায়ীরা ব্যবসার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করবে এটাই নিয়ম। তবে অসাধু ব্যবসায়ীগণ দেশপ্রেম ও নীতি নৈতিকতা ভুলে গিয়ে খাদ্যে ভেজালসহ অনৈতিকতার মাধ্যমে মানুষকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি এই অসাধু চক্রকে দেশ প্রেমে উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানান।

 

বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, একটি গোষ্ঠি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে বিদেশিদের সহায়তায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যেকোনো মূূল্যে অশুভ শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চায়। জোর করে অনির্বাচিত কাউকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় চাপিয়ে দিলে দেশের মানুষ মেনে নিবে না।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন জাতি, আমাদের ভালো খারাপ আমরা ভালোভাবেই বুঝি। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে অন্য কারো হস্তক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না। যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে; দয়া করে তারা আগে তাদের দেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের দিকে নজর দিক।

 

নির্বাচন সম্পর্কে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে অনির্বাচিত সরকার জনগণ আর দেখতে চায় না। যেভাবেই নির্বাচন হোক তা সংবিধানের আলোকেই হতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক থাকলে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) অংশগ্রহণ করবে।

লিবারেল ইসলামিক জোট চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী দেশের মসজিদের ইমাম, খতিব, মোয়াজ্জ্বিন, মন্দিরের পুরোহিত, সেবক, গীর্জার পাদ্রিদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ আবাসিক সুবিধা প্রদানের দাবি জানান।

 

কুমিল্লা জেলা বিএসপি সভাপতি পীরজাদা মুফতী বাকী বিল্লাহ আল আযহারীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইসলামি ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, জোটের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয়।

 

মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় স্বাধীনতা বিরোধী উগ্র জঙ্গীগোষ্ঠী আবারো দেশি-বিদেশী মহলের সহায়তায় দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হয়ে ওঠছে। এই মুহুর্তে জনগণকে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, স্বাধীনতা উত্তর এ পর্যন্ত যেসব রাজনৈতিক দলকে স্বাধীনতা বিরুধীতা ও উগ্র কর্মকান্ডের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষিদ্ধ ঘোষিত সব কটি সংগঠনের তালিকা ও তাদের নেতাদের ছবিসহ নাম-ঠিকানা এবং অতীত কর্মকান্ড সম্পর্কে অবিলম্বে দেশবাসীকে অবগত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিচার প্রার্থীদের বিচার পাওয়ার অধিকার যেমন রয়েছে। তেমনি কেউ নির্দোষ হলে তার ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি কারো বিরুদ্ধে মামলা হয় তাহলে তার আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা উচিত। কিন্তু দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর বিদেশিদের নগ্ন হস্তক্ষেপ কেনোভাবেই কাম্য নয়। ড. ইউনুসকে নিয়ে বিদেশীদের বিবৃতি ও আমাদের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

কুমিল্লা জেলা বিএসপি’র সাধারণ সম্পাদ মোঃ হাবিবুর রহমান পায়েলের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ভাইস চেয়ারম্যান পীরজাদা মুফতী গোলাম মহিউদ্দিন লতিফী, এস.এম সাহাব উদ্দিন, মোঃ মনির হোসেন, আল্হাজ্ব মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, বিএসপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আব্দুল আজিজ সরকার, বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান হাবিব, মহাসচিব সেলিম আহমেদ, কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও লিবারেল ইসলামিক জোটের জন সংযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সোহেল সামাদ বাচ্ছু, জাতীয় স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও বিএসপি এবং লিবারেল ইসলামিক জোটের দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আসলাম হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ দেলোয়ার হোসেন জন, সহকারী অর্থ সম্পাদক মোঃ মোশারফ হোসেন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ঢালী কামরুজ্জামান হারুন, আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদ আজমাঈন আসরার, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড শাহ আলম অভি, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আনোয়ার সাহাদাত জিহাদ, যুগ্ম সুফি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হাসান, যুগ্ম শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল হক রিমন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ নূরুল আনোয়ার হিরন, ব্রাহ্মনবাড়িয়া সভাপতি মোঃ জামাল সরকার, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইমাম মহসীন, ফেনী জেলা সভাপতি মোঃ আবু তাহেরসহ বিএসপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

 

সমাবেশে বিএসপি’র নেতাকর্মীরা ব্যান্ড বাজিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান ও একতারা প্রতীকের ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মিছিল সহকারে উপস্থিত হয়। জু’মার নামাজের পর থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন বিএসপি’র নেতাকর্মীরা। এই সময়ে কুমিল্লা শহর মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪