হোসেন বাবলা, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার বিস্তৃন্ন পাহাড়ি এলাকাজুড়ে শুধু পেয়ারা আর পেয়ারা। এ পেয়ারার কদর আছে দেশ ও বিদেশে। এবারও পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সম্প্রতি বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।আবার যেসব পেয়ারা সংগ্রহ করা হচ্ছে তা সংরক্ষণের অভাবে বাগানেই নস্ট হচ্ছে।
পটিয়া ও চন্দনাইশের উৎপাদিত পেয়ারা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। পটিয়ার কেলিশহরের কাজি পেয়ারা ও কাঞ্চননগরের পেয়ারা এখন পুরোদমে বাজারে। এই পেয়ারা একটানা পাওয়া যাবে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত।পেয়ারা উৎপাদনকারী চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার পটিয়া-চন্দনাইশে পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার বন্যা না হলে পেয়ারার বাম্পার ফলনের সুফল চাষিরা তুলতে পারতেন। এতে করে তাঁরা অনেক লাভবান হতেন।
পটিয়া-চন্দনাইশের পাহাড়ে দু’জাতের পেয়ারা রয়েছে।একটি কাজি পেয়ারা অন্যটি কাঞ্চননগর পেয়ারা নামে পরিচিত। কাজি পেয়ারা আকারে বড় হলেও স্বাদ একটু কম, আর কাঞ্চননগরের পেয়ারা আকারে ছোট হলেও স্বাদ এবং পুষ্টিতে ভরপুর।’
এদিকে পটিয়া-চট্টগ্রাম আরকান মহাসড়কের কমল মুন্সিরহাট, বাদামতল, রওশনহাট, কলেজ গেট, বাগিচাহাট, দোহাজারী, খানহাট রেলস্টেশন, কেলিশহর, পটিয়া রেলস্টেশন পেয়ারার বাজারে দেখা যায়, লাল সালু কাপড়ে মোড়ানো ভাড়ে ভাড়ে পেয়ারার পসরা সাজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। আর সেই লাল সালু কাপড়ের মোড়ানো ব্যাগের পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়।
চন্দনাইশ কাঞ্চননগরের গোয়াছি বাগান মালিক আঃ করিম বলেন, এখানকার পাহাড়ে প্রায় সাড়ে ১৩-১৫শ একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়।
এসব বাগানের গাছ থেকে ৩০-৪০ বার পেয়ারা পাওয়া যায়। সেসব বাগান বছরে দুবার পরিষ্কার করাসহ শ্রমিক ও ওষুধ বাবদ খরচ হয় ৫০-৬০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে বাগান থেকে প্রতিবছর আয় হয় ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।পটিয়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পটিয়ার গহিন অরণ্যে ২-৩ শত পেয়ারার বাগান গড়ে উঠেছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। এখানকার চাষিরা পেয়ারা চাষ করে অনেকেই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
কাঞ্চননগর এলাকার পেয়ারা চাষি শামশু বলেন, চন্দনাইশে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক পেয়ারা বাগান রয়েছে। পাহাড়ের অধিকাংশ জমি অনাবাদি ছিল, কিছু জমিতে হত জুমচাষ। বিগত দুই দশক ধরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে এসব অঞ্চলের পেয়ারা চাষ। ফলন ও চারা রোপণের পর তেমন খরচ না থাকা এবং লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন এ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এবার ব্যাপক পেয়ারা উৎপাদন হয়েছে।
পটিয়ার বাগান মালিক আকবর উদ্দিন বলেন, পেয়ারা সংরক্ষণের জন্য এ অঞ্চলে কোনো হিমাগার নেই। হিমাগার থাকলে লাখ লাখ টাকার পেয়ারা নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেত।