নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার ভাসমান অবস্থায় তীরে টেনে নিয়ে এসেছেন স্থানীয় জেলেরা। এই ট্রলারটিতে দেড়শতাধিক যাত্রী ছিলেন। তাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। তারা সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন।বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ভোর ৬টায় জেলেরা সাগরে ভাসমান অবস্থায় ট্রলারটি মহেশখালীয়াপাড়া ঘাটের কূলে নিয়ে আসে। এতে প্রাণে রক্ষা পেলেন দেড়শতাধিক যাত্রী।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান জহির আহমেদ।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জোবাইর সৈয়দ বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তারা বিষয়টি জেনেছেন। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে। তবে ওটি কোস্টগার্ড নিয়ন্ত্রিত এলাকা। একটি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। তবে কোন লোকজন পাওয়া যায়নি।উদ্ধারকারী নৌকার মাঝি-মাল্লারা জানান, ওই ট্রলারের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তারা জেনেছেন, রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও স্থানীয় দালালরা মিলে তাদের শিবির থেকে বের করে আনেন। সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দালাল চক্রের সদস্যরা গত পাঁচদিন ধরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকার পয়েন্ট থেকে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে এই ট্রলারে তোলা হয়। পরে সাগরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরার পর বৃহস্পতিবার ভোররাতে ট্রলারের থাকা তিনজন মাঝি ট্রলারটি উপকূলের কাছাকাছি এনে তারা সাগরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় ট্রলারটি ঢেউয়ের কবলে পড়ে ভাসতে থাকে। এক পর্যায়ে মাছ শিকার শেষে সাগর থেকে কূলে ফেরার সময় দুটি নৌকার লোকজন ট্রলারটি দেখতে পায়। ওই সময় ট্রলারে থাকা নারী-পুরুষদের আর্তচিৎকারে সহযোগিতায় এগিয়ে যান নৌকার মাঝি-মাল্লারা। পরে নৌকা দুটিতে রশি বেঁধে ট্রলারটিকে টেনে কূলে নিয়ে আসা হয়।
তারা আরও বলেন, কূলে নিয়ে আসার পর ট্রলারে যাত্রীরা যে যেদিকে পারে সেদিকে পালিয়ে যায়। অন্যথায় উদ্ধার করে নিয়ে আসার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়। এসময় আমরা তাদের কোনো ধরনের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে অবহিত করা হয়। তিনি থানা ও ইউএনওকে অবহিত করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে আরেকজন নৌকার মাঝি বলেন, ভাসমান অবস্থায় সাগর থেকে কয়েকবছর আগে কিছু রোহিঙ্গা নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রোহিঙ্গা পারাপারের অভিযোগ এনে উল্টো আমাকে কারাগারে পাঠান। আজ ইচ্ছা করলে অনেক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটকে রাখা যেত। কিন্তু ঝামেলা এড়াতে গিয়ে এ থেকে বিরত ছিলাম। প্রায় দেড়শতাধিক মতো নারী-পুরুষ ও শিশু ছিল ওই ট্রলারে। তারা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাাসিন্দা।