ই-পেপার | শনিবার , ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ময়মনসিংহে অপরিকল্পিত আর্চস্টিল সেতু নির্মাণে শতকোটি টাকার ক্ষতি

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ:

 

ময়মনসিংহে অপরিকল্পিত স্টিলআর্চ সেতুর সংযোগ সড়কে শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে রাষ্ট্রের। অতিরিক্ত অর্থ অপচয় বন্ধে অধিকতর তদন্তের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী সহ সাধারণ জনগণ। স্থানীয় ব্যবসায়ী আবু সাঈদ মন্ডল জানান, ময়মনসিংহে স্টিল আর্চ সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মানে ভাংছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ মার্কেট ঘরবাড়ি সহ বহু স্থাপনা।

 

কম দূরত্বে মহাসড়কে সংযোগ না দিয়ে ঘুরিয়ে পেচিয়ে দ্বিগুনের বেশী জমি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেতুর সংযোগ সড়কে প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রনিংয়ে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানান। স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ ফয়জুল হক ও মোশাররফ হোসেন জানান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের যানজট নিরসন সহ সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক বাড়াতে কেওয়াটখালী ব্রহ্মপুত্র নদের উপর দেশের বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন আর্চস্টিল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ৩ হাজার ৮শ কোটি টাকা ব্যয় ধার্যে সম্প্রতি এ সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী ব্রহ্মপুত্র নদের স্টিল আর্চ সেতুর সংযোগ সড়কটি রেল লাইনের পাশ দিয়ে সোজা ক্ষুগঞ্জ মুটকি ভাঙ্গা সড়ক সেতুতে লাগার কথা। অত্যাধুনিক এ স্টিল আর্চ সেতু নির্মন নিয়ে সাধারণ মানুষের উৎ্যুক্ষ্মতা থাকলেও সেতুর সংযোগ সড়কের প্রকল্পের ব্যয় ও প্ল্যানিং নিয়ে দুশ্চিন্তায় আমরা শম্ভুগঞ্জ মুটকি ভাঙ্গা রেল সেতু থেকে (ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ নেত্রকোনা শেরপুর মহাসড়কে) ঝাউগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মুটকি ভাঙ্গা সড়ক সেতুর দূরত্ব ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার।

 

অথচ দুটকি ভাঙ্গা রেল সেতুর পাশ দিয়ে সংযোগ সড়কটি রেললাইনের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে চায়না মোড় হয়ে আবার মুটকি অঙ্গ সড়ক সেতুতে লাগানো হচ্ছে। যে কারনে দূরত্ব বাড়ছে ১৫০০ মিটারের মতো। এতে চায়না মোড়ের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, ঘরবাড়ী সহ বহু জমি গাছপালা অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, বাড়ছে রাষ্ট্রের ব্যয়, আবার ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন।

 

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে দফায় দফায় বৈঠকও করছেন সেতু প্রকল্প কর্মকর্তারা। স্থানীয়রা বলছেন, প্রকল্পটি সরেজমিনে দেখলে যে কেউ বলবেন এসব অধিগ্রহন ও বড়তি সড়ক নির্মানের ফলে সরকারের বাড়তি ব্যয় হবে শত শত কোটি টাকা। তারা জানান, মুটকি ভাঙ্গা রেল সেতু থেকে মুটকি ভাঙ্গা সড়ক সেতু পর্যন্ত রাস্তাটি সংযোগ দিলে সরকারের কয়েশো কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

 

রাষ্ট্রের অতিরিক্ত অর্থ অপচয় বন্ধে অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়য়র দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীর এদিকে ভূমি অধিগ্রহণে কেমন অনিয়ম হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন জেলা ভূমি অধিগ্রহণ অফিস। জেলা কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল হক জানান, সেতু ঘীরে মোট জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে ৮০ একর। জমি অধিগ্রহণ তিনটা ভাগে করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন একটি ভাগে অধিগ্রহণে ৭৪ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে, বাবী দুটো ভাগের ব্যয় এখনো নির্ধারণ হয়নি।

 

তিনি বলেন কতটুকু জমি নেবেন সেটা নির্ধারণ করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা, আমরা শুধু জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সমাধানে সহযোগিতা করে থাকি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্টিল আর্চ সেতু প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ দিদারুল আলম তরফদার জানান, বিয়ে করতে গেলে মানুষ পাঁচটি পাত্রী দেখে, যেটি পছন্দ হয় সেটি বিয়ে করে, আমরাও পাঁচটি প্লান করেছি, যেটা পছন্দ হয়েছে সেটি একনেকে পাশ হয়েছে।

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের খরচ ব্যয় কমাতে নির্দেশ দিয়েছেন, সম্প্রতি মিডিয়াতে এমন সংবাদ প্রচার হয়েছে. অজড় ঘুরিয়ে পাচিয়ে সেতু সংযোগ সড়ক নির্মানে রাষ্ট্রের ব্যয় বাড়ছে কিনা এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে সেতু প্রকল্প কর্তা দিদারুল আলম বলেন, প্রকল্পটি একনেকে পুশ হয়েছে কিছু বলার নাই… সেতু সংযোগ সড়ক নির্মানে অতিরিক্ত অর্থ অপচয় হচ্ছেনা বলেও জানান তিনি।